ইসলামী ব্যাংকিং উন্নয়নে ১০টি সুপারিশ

ইসলামী ব্যাংকিং উন্নয়নে ১০টি সুপারিশ

১.ইসলামি ব্যাংকিং অ্যাক্ট প্রণয়ন:
পৃথক ইসলামি ব্যাংক কোম্পানী আইন প্রণয়ন করা এবং তাতে Accounting and Auditing Organization fo Islamic Financial Institution (AAOIFI) ও Islamic Finance Service Board (IFSB) কর্তৃক প্রণীত এবং Islamic Development Bank (IDB)  কর্তৃক সমর্থিত স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী নীতিমালা সংযোজন করা।


২.শরিয়াহ কাউন্সিলকে সুপারভাইজরী ক্ষমতাপূর্ণ করা:
প্রতিটি ইসলামী ব্যাংকের নিজস্ব শরিয়াহ কাউন্সিল থাকলেও প্রচলিত ও রাষ্ট্রীয় আইনের অধীনে থেকেই তাদের শরিয়াহ পরিপালন করতে হয়। অথচ শরিয়াহ পরিপালন নিশ্চত করতে প্রভাবমুক্ত, স্বাধীন, শক্তিশালী ও সুপারভাইজরী ক্ষমতা স¤পন্ন সংস্থার নিবিড় পর্যবেক্ষণ ও তত্ত্বাবধান প্রয়োজন; যা এদেশে সম্ভব হচ্ছে না। সুতরাং এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের আরও কার্যকর গুরুত্ব দেয়া দরকার।


ইসলামী ব্যাংকিং উন্নয়নে ১০টি সুপারিশ


৩.মুরাক্বিব নিয়োগ:
ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে শরিয়াহ পরিপালন নিশ্চিতকরণের জন্য প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানে পর্যাপ্ত সংখ্যক যোগ্য ও দক্ষ মুরাক্বিব নিয়োগ এবং স্বাধীনভাবে দায়িত্ব পালনের সুযোগ প্রদান।

৪.বহি: শরিয়াহ নিরিক্ষা চালু করা:
ইসলামি ব্যাংকিং কার্যক্রমকে বেগবান ও যথাযথভাবে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য প্রচলিত বহি: নিরিক্ষার মতো বাধ্যতামূলক বহি: শরিয়াহ নিরিক্ষা (ঊীঃবৎহধষ ঝযধৎরধয অঁফরঃ) পরিচালনা করা।

৫.জমা গ্রহণে শরিয়াহ সচেতনতা:
গ্রাহকদের কাছ থেকে আমানত সংগ্রহের সময় কর্মকর্তাগণ শরিয়াহ পরিপালনে সচেতন হতে হবে। যাতে কোনো বিষয়ে শরিয়াহ লঙ্ঘন না হয় এবং গ্রাহকরা যেন জমা সংক্রান্ত শরিয়াহ নীতিমালা জানতে পারে সে বিষয়ে তৎপর থাকা। সুতরাং জমা গ্রহণের ব্যাপারে ইসলামী ব্যাংকে লঙ্ঘিত বিষয়গুলোর ব্যাপারে সতর্ক ও সচেতন হতে হবে এবং গ্রাহককে আমানত নীতিমালা সম্পর্কে অবহিত করতে হবে।

৬.শরিয়াহ বিষয়ক সেমিনার ও প্রচারণা:
গ্রাহকদের শরিয়াহ পরিপালন স¤পর্কিত সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সকল শাখায় বছরে অন্তত একবার গ্রাহক সমাবেশ ও শরিয়াহ বিষয়ক দিকনির্দেশনার ব্যবস্থা করা। শরিয়াহসম্মত বিভিন্ন বিনিয়োগ পদ্ধতির উপর আলাদা লিফলেট ছাপিয়ে তা গ্রাহকদের মাঝে বিতরণের ব্যবস্থা করা।

৭.বিনিয়োগ সহজীকরণ:
বিনিয়োগ প্রদানের ক্ষেত্রে ডকুমেন্ট স¤পাদনা, ক্রয়-বিক্রয় পদ্ধতি প্রভৃতি আরো সহজভাবে নির্ধারণ করতে হবে। ঈধংয ঈৎবফরঃ এর কেত্রে উধরষু চৎড়ফঁপঃ এর সুবিধা গ্রহণের মাধ্যমে সাধারণ ব্যাংকে যে সুবিধা দেয়া হচ্ছে সে ক্ষেত্রে লাভ কম নেয়ার মাধ্যমে গ্রাহকদেরকে আরো ভালভাবে আকৃষ্ট করা যেতে পারে।

৮.কেন্দ্রীয়, বিভাগীয় ও জেলে ভিত্তিক ক্রয়-বিক্রয় সেল স্থাপন:
পণ্য উবষরাবৎু ও বিনিয়োগ প্রদানের যাবতীয় কার্যক্রম সহজ করতে কেন্দ্রীয় বা বিভাগীয় বা জেলা ভিত্তিক ক্রয়-বিক্রয় সেল স্থাপন করা যেতে পারে।

৯.নতুন নতুন প্রোডাক্ট উদ্ভাবন:
প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে যুগের চাহিদা ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে নতুন নতুন প্রোডাক্ট উদ্ভাবন এবং তা বাস্তবায়ন করা। এ লক্ষ্যে সমন্বিতভাবে ব্যাপক গবেষণাকর্ম পরিচালনা করা। তাছাড়া প্রচলিত ব্যাংকের প্রোডাক্টকে ইসলামিকরণের দিকে মনযোগ কমিয়ে স্বতন্ত্র ইসলামি প্রোডাক্ট উদ্ভাবনে গুরুত্বারোপ করা।

১০.জনগণকে ইসলামি অনুশাসন মানতে উৎসাহিত করা:
ইসলামী অনুশাসন না থাকায় ইসলামী ব্যাংকের কাঙ্খিত লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য অর্জন একদিকে যেমন ব্যাহত হচ্ছে এবং অন্যদিকে পূর্ণাঙ্গ শরিয়াহ বাস্তবায়নও সম্ভব হচ্ছে না। উল্লিখিত এ সমস্যা সমাধানের জন্য জনসাধারণকে ইসলামী অনুশাসন মেনে চলার সুফল স¤পর্কে অবহিত করা এবং দাওয়াতি কাজের মাধ্যমে শিক্ষিত, অশিক্ষিত, অর্ধশিক্ষিত এবং সাধারণ মানুষের মাঝে সুদের কুফল এবং ইসলামী ব্যাংকিংয়ের গুরুত্ব তুলে ধরা প্রয়োজন।
Previous Post Next Post

Ads